কবুতরের রোগ এবং ঔষধের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক | Rahul IT BD

কবুতরের রোগ এবং ঔষধের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

প্রিয় পাঠক আপনারা যারা কবুতরের রোগ এবং ঔষধের নাম সম্পর্কে জানেন না, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটিতে কবুতরের রোগ প্রতিরোধ করার উপায় এবং লক্ষণসমূহ আলোচনা করা হয়েছে। সে বিষয় সম্পর্কে আপনাদেরকে সঠিক তথ্য দেওয়ার যথাযথ চেষ্টা করব।
কবুতরের রোগ এবং ঔষধের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত
এজন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন এবং এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকলে, এই আর্টিকেলটিতে আপনাকে স্বাগতম।

ভূমিকা

প্রিয় বন্ধুরা আপনাদের যদি কবুতরের রোগ, রোগের লক্ষণ, ওষুধের নাম সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। এই আর্টিকেলে এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। 

আমি আশা করি, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেল পড়লে আপনার এসব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আর কোন চিন্তা থাকবে না। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।

কবুতর/পাখির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রাকৃতিক ঔষধ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানুন 

প্রিয় বন্ধুরা আমরা বিভিন্ন কারণে কবুতর লালন-পালন করে থাকি। গ্রাম এবং শহরের মানুষ কবুতর অনেকেই শখের বসে আবার অনেকেই পেশাগত কারণে লালন পালন করে থাকে। কবুতর বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। 

কবুতরের রোগের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে, বিভিন্ন ভেটেনারি ঔষধ রয়েছে। এই আর্টিকেলে এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু আজকে ভেটেনারি ওষুধের ব্যবহার ছাড়াই কিভাবে কিছু রোগের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায়ে বা ঘরোয়া পরিবেশে কবুতরের চিকিৎসা করা যায়, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।

তুলসী পাতাঃ কবুতরের ঠান্ডা জ্বর কাশি এসব সমস্যার ক্ষেত্রে তুলসী পাতা খাওয়ানো যায়। এক্ষেত্রে এক লিটার পানির মধ্যে ১০ মিলি তুলসী পাতার রস মিশায় সপ্তাহে একদিন খাওয়ানো যেতে পারে।


পুদিনা পাতাঃ ঠান্ডা জ্বর ভাব আমাশয় ক্ষেত্রে এবং পুদিনা পাতা রস এক লিটার পানির সাথে পাঁচ মিলি রস মিশিয়ে মাসে দুই একবার খাওয়ানো যেতে পারে।

নিম পাতাঃ কৃমিতে আক্রান্ত হলে, নিমপাতা একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ওষুধ, যেটা শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। নিম পাতার রস পানির সাথে মিশিয়ে অথবা হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে সামান্য পরিমাণ খাওয়ালে কৃমি রোগ ভালো হয়।

আদা রসুন হলুদের উপকারিতাঃ ব্যাথা দূর করে, রক্ত পড়া বন্ধ করে, ঠান্ডা জ্বরের প্রভাব দূর করে, কফ পরিষ্কার করে, কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আদা, রসুন, হলুদ মূলত শরীরের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।

কবুতরের/পাখির উপর অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জেনে নেওয়া যাক

কবুতর গ্রাম বা শহরের মানুষ অনেকেই সখের বসে পালন করে থাকে আবার কেউ এটাকে অনেকেই পেশা হিসেবে নিয়েছে। তো আমাদের দেশের বিভিন্ন আবহাওয়া জনিত কারণে বিভিন্ন ধরনের কবুতরের রোগ দেখা দিয়ে থাকে। 

যার প্রয়োজনে আমাদেরকে অনেক সময় এন্টিবায়োটিক কবুতরকে খাওয়াতে হয়। এখন কবুতরের উপরে যে এন্টিবায়োটিকস প্রয়োগ করা হয় তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি? সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। অনেকেই আছেন কবুতরের ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিকের যে প্রভাব সেটা না চিন্তা করে অনায়াসে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে থাকেন। 

অনেকেই এন্টিবায়োটিক, হারবাল, হোমিও একসাথে মিশিয়ে খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এন্টিবায়োটিক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার পাশাপাশিও ভালো ব্যাকটেরিয়ারও প্রাণনাশের কারণ হয়ে থাকে। এতে কবুতরের শরীরের নেতিবাচক নানান প্রভাব দেখা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। 

তাই এন্টিবায়োটিক খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা অভিজ্ঞ কোন খামারির কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া উচিত। অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক খাওয়ানোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিতে পারে যেমন-
  • ফুসকুড়ি হতে পারে
  • বমি বমি হতে পারে
  • চামড়ার পরিবর্তন দেখা দিতে পারে
  • ডায়রিয়া হতে পারে
  • পেট ব্যাথা হতে পারে
  • মাথা ঘোরা হতে পারে
  • শ্রবন শক্তি কমে আসতে পারে
  • পাতলা পায়খানা দেখা যায়

কবুতরের সবুজ পায়খানা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

আমাদের দেশে বিভিন্ন আবহাওয়া জনিত কারণে, কবুতরের রোগ এর মধ্যে প্রায়ই সবুজ পায়খানা, ঝিমানো, চুনা পায়খানা এ ধরনের অসুখ দেখা যায় এবং এসব রোগেই বেশি আক্রান্ত হয়। এ ধরনের রোগ থেকে প্রতিকার করতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের ভেটেনারি ঔষধ রয়েছে। 

কিন্তু আমরা এখানে কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানব। এর জন্য যা যা লাগবে, তা জানতে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এলাচি, পনির, কাসুন্দি এগুলো মুদির দোকানেই পাওয়া যায়। এগুলো মিহি গুড়া করে পানির সাথে মিক্সার করে সেটাকে ছোট ছোট ট্যাবলেট এর মত করে বানাতে হবে। 

এগুলো রোজ খাবারের পর একটা করে বড়ি টানা সাত দিন ধরে খাওয়াতে হবে। ইনশাআল্লাহ কবুতর আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠবে।

কবুতরের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে জানতে মনোযোগ সহকারে পড়ুন

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে কবুতর দেখা যায় পাশাপাশি শহরেও এখন অনেকেই কবুতর পালন করে থাকে। কবুতর বেশিরভাগ আমরা শখের বসে পালন করে থাকি। দেশী এবং বিদেশী বিভিন্ন জাতের কবুতর আমরা পালন করে থাকি। 

যেহেতু আমাদের অনেক ঋতুর দেশ সেহেতু বিভিন্ন আবহাওয়া জনিত কারণে, কবুতরের বিভিন্ন রোগ দেখা যায়। তার কারণ কিছু উল্লেখ করা হলোঃ
  • বিভিন্ন ধরনের পোকা মাকড় এর আক্রমণেও অসুস্থ হতে পারে
  • দূষিত খাদ্য খাওয়ালে রোগে আক্রান্ত হতে পারে
  • ভেজা, নোংরা, বা অপরিষ্কার জায়গায় রাখলে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে
  • দূষিত পানি পান করালে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে
এখন কবুতরের বিভিন্ন ধরনের রোগ এবং এর প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। এই বিষয় সম্পর্কে জানতে, নিচের পয়েন্টগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুনঃ

ঠান্ডা জনিত রোগঃ বিশেষ করে শীতকালে কবুতরের ঠান্ডা জনিত রোগ বেশি দেখা যায়। এ সময় কবুতরের নাক দিয়ে তরল পানি বা তরল পদার্থ বের হতে দেখা যায়। এ সময় কবুতরকে (Respiron) সিরাপ খাওয়ালে ঠান্ডা জনিত রোগ ভালো হয়ে যেতে পারে।


নিউমোনিয়া রোগঃ যদি কবুতরের গলার মধ্যে গুটি গুটি বা কফ জাতীয় কোন পদার্থ দেখা দিয়ে থাকে বা শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে তাহলে নিউমোনিয়ার লক্ষণ হিসেবে প্রাথমিক অবস্থায় আমরা ধরে নিতে পারি। এ অবস্থায় কবুতরের শরীর খুব গরম হয়ে ওঠে যার কারণে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এজন্য শুষ্ক জায়গাতে রাখতে হবে এবং গরম খাবার দিতে হবে।

পক্স দেখা দিলেঃ কবুতরের পক্স এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এ ধরনের ভ্যাকসিন পশু চিকিৎসক বা পশু হসপিটাল থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

ম্যালেরিয়া রোগঃ এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে কবুতর ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় । রক্তের কনিকাগুলো আস্তে আস্তে ধ্বংস করে ফেলে। এর জন্য কবুতর আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে ওঠে ,হাঁটতে পারে না, চোখে ভালো দেখতে পারে না, ঘাড় বাঁকিয়ে যায়। 

এসব ক্ষেত্রে কবুতরকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার-দাবার দেওয়া উচিত, বিশুদ্ধ পানি পান করানো উচিত, পাশাপাশি কবুতরের ঘরকে জীবানু নাশক বা জীবাণুমুক্ত করা উচিত। তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে ম্যালেরিয়া রোগ ভালো হয়ে যায়।

ডায়রিয়া রোগঃ কবুতরকে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখলে, দূষিত খাবার, দূষিত পানি পান করালে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খেতে দিতে হবে পাশাপাশি শস্যদানা, ধান, গম এসব খাওয়াতে হবে। এ ধরনের দানাদার যুক্ত খাবার কবুতরের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।

কবুতরের রোগের ওষুধের নামের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

প্রিয় বন্ধুরা আমরা এখন কবুতরের রোগের ওষুধের নামের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।আপনাদের সুবিধার ক্ষেত্রে এখানে কিছু ওষুধের নামের তালিকা করে দেওয়া হলো। আপনাদের কবুতরের রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানা বোঝা না থাকলে, দয়া করে আন্দাজে যেকোন ওষুধ খাওয়াবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসক বা ভালো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
  • Electromin- স্যালাইন
  • Calplex- ক্যালসিয়াম
  • Cosumix Plus- এন্টিবায়োটিক
  • Avinex- কৃমির ঔষধ
  • Liva Tone- লিভার টনিক
  • Eye Drops- চোখের জীবাণু নাশক
  • Timsen- এন্টিজার্ম স্প্রে
  • Respiron- ঠান্ডা ও শ্বাস কষ্টের প্রতিশোধক
  • Vitamin C- ভিটামিন সি
  • Riboson- পক্স এবং ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়

উপসংহার

পরিশেষে আমি এই কথা বলেই শেষ করব যে, এই আর্টিকেলে আমি কবুতরের রোগ এবং প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে পাশাপাশি আপনাদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছি বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে। আমি আপনার এবং আপনাদের পরিবারের সকলের সুস্থতা কামনা করছি। 

যদি এই আর্টিকেল পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে এ ধরনের নিয়মিত আর্টিকেল সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url