গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার ১০টি উপায় জানুন | Rahul IT BD

গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার ১০টি উপায় জানুন

প্রিয় পাঠক এই পোস্টটিতে গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়, গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল, গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই যে লক্ষণ প্রকাশ পায়, গর্ভকালীন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কেন হয় ইত্যাদি এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোকপাত করা হয়েছে।
গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার ১০টি উপায়


আপনারা যারা এই সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাদেরকে আজকেরে দেখলে স্বাগতম জানাই।

ভূমিকা

অনেক মায়েদের গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। তবে এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা রয়েছে যা প্রায় দেখা যায় গর্ভাবস্থায় পিটু কোমরে ব্যথা পরিলক্ষিত হয়। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য অনেকেই ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকে। 

এই পোস্টটিতে এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ব্যাপকভাবে লেখা হয়েছে। আজকের এই পোস্টটি অনেক বেশি ইনফরমেটিভ হবে। তাই যারা এই সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আছেন আমি আশা করি আপনারা এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়লে তার সমাধান পাবেন।

গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার ১০টি উপায় জানুন

গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা বা মাজা ব্যথা নারীদের একটি কমন সমস্যা। প্রতি চার জন মহিলার তিনজনই এই সমস্যা ভুগে থাকেন। ক্রমবর্ধমান জরায়ু এবং প্রেগনেন্সি জনিত হরমোনের পরিবর্তন এর প্রধান কারণ। 

গর্ভবতী মহিলার জরায়ু যতই বড় হয় ততই মধ্যাকর্ষণের বিপরীতে এর ভার বহন করতে হচ্ছে আর এটি পেটের মাংসপেশিকে দুর্বল করে দেয় এবং পুরো ভারটাই মেরুদন্ডের উপর চাপ তৈরি করে। এর ফলে প্রেগনেন্সির সময় নারীরা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করলে কোমরে ব্যথা অনুভব করেন। 

গর্ভধারণের শুরু থেকেই শরীরের কিছু হরমোনের নিঃসরণ ওঠানামা করে। এর মধ্যে প্রজেস্টেরন এবং রিলাক্সিন ও হরমোন কোমরের বিভিন্ন জয়েন্ট এবং লিগামেন্টকে নরম এবং ঢিলা করে দেয়। এতে করে জয়েন্টের ভার বহন ক্ষমতা কমে যায় ফলে গর্ভবতী নারীরা খুব সহজে কোমর ব্যথা আক্রান্ত হয়।

অনেকের জন্য এই ব্যথা তেমন সমস্যা নাও হতে পারে, আবার কারো জন্য এটা খুবই মারাত্মক ও অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে। গর্ভাবস্থার পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় নিয়েই আজকের আলোচনা।

১. সাধারণ বা হালকা ব্যায়াম: পিঠ ও কোমর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য হাটা ও সাঁতার কাটার মত সাধারণ ব্যায়ামগুলো করা যেতে পারে। 

সাঁতার মেরুদন্ডকে শিথিল হতে সাহায্য করে এবং পা, বাহু এবং পিঠের পেশী গুলোকে টানটানো শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। যদি মাথা ঘোরায় তাহলে সাঁতার কাটা বন্ধ রাখতে হবে।

২. পজিশন বদল করুন: গর্ভাবস্থায় মেয়েদের এক জায়গায় বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা বসে থাকা উচিত নয়। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলে মাঝেমধ্যে পজিশন বদল করুন। 

বসার সময় আরামদায়ক চেয়ার ব্যবহার করুন কিংবা পিঠে সাপোর্ট হিসেবে বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। যতক্ষণ বসে থাকবেন, সোজা হয়ে বসে থাকার চেষ্টা করবেন।

৩. আরামদায়ক জুতা ও পোশাক পরিধান করুন: গর্ভাবস্থায় পরিধানের পোশাক ও জুতা  বাছাই করার ক্ষেত্রে একটু ভেবেচিন্তে বাছাই করতে হবে।প্রেগন্যান্ট অবস্থায় হাই হিল জুতা পিঠ ও কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। উঁচু জুতা শরীরে ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। 

একেবারে ফ্ল্যাট জুতা পরা ঠিক নয় তাই গর্ভকালীন সময় আরামদায়ক জুতা ও পোশাক পরিধান করার চেষ্টা করবেন।

৪. ভারী জিনিস তোলা এড়িয়ে চলুন: গর্ভাবস্থায় ভারী জিনিস উঠানো থেকে বিরত থাকতে হবে। নিচু হয়ে বা ঝুকে যেতে হয় এমন কোন কাজই করা যাবে না। এ সময় সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করাও যাবে না এতে করে পিট ও কোমর ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

৫. এক পাশে ঘুমানোর অভ্যাস করুন: চিত হয়ে না শুয়ে এক পাশে ফিরে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। পাশে ফিরে ঘুমালে শিশুর দেহে ভালোভাবে রক্ত প্রবাহিত হয়। 

যদি হাঁটু বাঁকা করে শুতে হয় তাহলে দুই হাঁটুর মাঝখানে একটি ছোট বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে পিঠের নিচের অংশের টান কম পড়বে।

৬. সেঁক দিতে পারেন: পিঠ ও কোমর ব্যথা কমাতে গরম অথবা ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন। এতে করে কিছু সময়ের জন্য হলেও ব্যথা কমবে। এর নিউপ্রিন-ভিত্তিক জেল প্রযুক্তি বেশিক্ষণ তাপ ধরে রাখে। 

এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে পেশির যন্ত্রণা কমায় ও অঙ্গ সঞ্চালনের ক্ষমতা বাড়ায় ও স্বাভাবিক করে। তবে এর জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

৭. ম্যাটারনিটি বেল্ট ব্যবহার করুন: বসা, দাঁড়ানো বাটার সময় বেশিক্ষণ আরামের জন্য মেটারনিটি বেল্ট পরিধান করলে পিঠের মারাত্মক যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত লম্বা সময়ের জন্য বেল্ট পরে থাকবেন না, কারণ এর ফলে পেশিগুলি সহজে কাজ করতে পারবে না।

ব্যথা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন। পিঠের ব্যথা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম ওষুধ খেতে পারেন। 

আপনার পিঠে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যেকোনো পদ্ধতি বেছে নেওয়ার আগে অবশ্যই আপনার গাইনোকোলজিস্ট এর পরামর্শ নিন।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল জেনে নিন

গর্ভধারণ সব নারীর জীবনে একটা বিশেষ সময়। তবে অনেক সময় দম্পতিরা চেষ্টা করে গর্ভধারণ করতে পারেন না। অস্বাস্থ্যকাল লাইফ স্টাইল, খাওয়া-দাওয়া, বয়স এ সকল নানা কারণে গর্ভধারণ দেরি হয়ে থাকে। 

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়াতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে প্রতিদিনের লাইফস্টাইল, খাদ্যাভ্যাস সহ কিছু কৌশল অনুসরণ করলে বাড়তে পারে গর্ভধারণের সম্ভাবনা। এ ধরনের দশটি কৌশল নিয়ে আজকে আলোচনা করা হলো।

১. ঋতুচক্রের পুনরাবৃত্তির তথ্য সংরক্ষণ: সন্তান নিতে ইচ্ছুক নারীরা প্রতি মাসে তার পিরিয়ডের প্রথম তিনটি তারিখ মনে রাখুন। প্রতিমাসেই একই দিনে পিরিয়ড শুরু হলে তা নিয়মিত বলে ধরে নেয়া হয় তবে এটা না হলে অনিয়মিত পিরিয়ড হিসেবে গণ্য হবে।

পুরো বিষয়টি মনে রাখতে গ্লোওভুলেশনের মতো বেশ কিছু পিরিয়ড ট্রেকার অ্যাপ অনলাইনে পাওয়া যায়। নারীর ডিম্বাশা থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। অন্যদিকে নারী দেহে প্রবেশের পর পুরুষের শুক্রাণু ৫ দিন পর্যন্ত কার্যক্রম থাকতে পারে।

২. ওভুলেশনের দিকে দৃষ্টি রাখা: সাধারণত পিরিয়ডের দুই সপ্তাহ আগে একজন নারীর অভুলেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশ্য যাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র অনিয়মিত তাদের ovulation এর সময় নির্ধারণ করা বেশ কঠিন। তবে সাধারণত পরবর্তী পিরিয়ডের আগের ১২ থেকে ১৬ দিন আগে এটি ঘটতে পারে।

ওভুলেশন প্রেডিকশন কীটের সাহায্যে নারীর কখন ওভুলেশন হচ্ছে, সেটা অনুমান করা সম্ভব। প্রতিমাসে ওভুলেশনের সময় এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় ও ডিম্বাশয়কে ডিম্বাণু নির্গত করতে প্রস্তুত করে।

ওভুলেশনের ঠিক আগে যখন একজন নারী সবচেয়ে সক্রিয় অবস্থায় থাকেন, তখন শ্লেষ্মার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং পাতলা, স্বচ্ছ ও পিচ্ছিল হয়ে যায়। সারভিকেল শ্লেষ্মা এভাবে পিচ্ছিল হয়ে শুক্রানো কে ডিম্বানুর কাছে পৌঁছাতে সহায়ত করে।

৩. ফার্টাইল উইন্ডোর সময় বিকল্প দিনে যৌন মিলন: আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ফার্টিলিটি উইন্ডো (ডিম্বানু নির্গত হওয়ার প্রস্তুতি ও নির্গত হওয়ার পরে কার্যকর থাকার সময়) সাধারণত ছয় দিনের। 

অভ্যুলেশনের দিন এবং এর আগের পাঁচ দিন। প্রতি মাসে একজন নারী এই সময় জন্মদানের সবচেয়ে বেশি সক্ষম বা উর্বর থাকেন।

৪. গর্ভাবস্থার আগে ভিটামিন খাওয়া: সঠিক খাদ্যাভাস এবং শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান আপনাকে দ্রুত গর্ভবতী হওয়ার জন্য সহায়তা করতে পারে। 

এজন্য প্রতিদিন মাল্টিভিটামিন খেতে পারেন। আগে থেকে ফলিক এসিড খাওয়া শুরু করাটা ভালো। এর কারণ, নিউরাল টিউব বা গর্ভধারণের তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ড পরিপূর্ণতা পায়। 

৫. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: গর্ভধারণের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার একজন নারীর দেহে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও আয়রনের মত গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদানে সুষম অবস্থা বজায় রেখে গর্ভধারণের সহায়তা করে। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের, ফল সবজি, সুষম প্রোটিন, দুগ্ধজাতপূর্ণ ও চর্বিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। 

ফলিক এসিডযুক্ত সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পাশাপাশি একজন নারী সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত খাবার এবং বিভিন্ন ধরনের ফলের রস খেতে পারেন।

৬. ধূমপান ও মদ্যপানে ক্ষতি: ধূমপানের কারণে নারী ও পুরুষ উভয়ারি বন্ধ্যাৎ এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধূমপান নারী ডিম্বাশয়ের জীর্ণতা তৈরি করে এবং দ্রুত এর ডিম্বাণুকে নিঃশেষ করে দেয়। ফলে জন্মদানের ক্ষমতা হ্রাস পায়।

৭. ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন: যেসব নারী অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন বা নিয়মিত ভারী কাজ করেন তাদের ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। 

যেসব নারী ভারী ব্যায়াম করেন তাদের রজচক্রে ব্যাঘাত ঘটতে দেখেছেন চিকিৎসকরা। এজন্য যতটা সম্ভব বাচ্চা নিতে ইচ্ছুক নারীদের ভারী ব্যায়াম ও ভারী কাজ এড়িয়ে চলা উচিত। 

৮. বয়স বাড়লে কমে উর্বরতা: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নারীর জন্মদানের ক্ষমতা কমতে পারে। বয়সের সঙ্গে বদলাতে থাকা ডিম্বানু ও তার মান দ্রুতে কমে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। 37 বছরের পর কমে যায় এবং ৪০ এর পার তা অনেকখানি হ্রাস পায়। রাস পাওয়ার অর্থ গর্ভধারণের সময় বেশি লাগে।

৯. মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ পুরুষদের ফার্টিলিটি এবং মহিলাদের ডিম্বোস্ফোটনকে প্রভাবিত করতে পারে। কর্মজীবনের নানা মানসিক চাপ একজন দম্পতিকে গর্ভধারণের প্রচেষ্টায় বিলম্ব ঘটিয়ে থাকে।

এজন্য যোগ ব্যায়াম, মনের-শরীরের বিনোদন প্রোগ্রাম, আপনাকে উদ্বেগম মুক্ত হতে এবং আপনার গর্ভধারণের সামগ্রিক সম্ভাবনা গুলিকে বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।

১০. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: অতিরিক্ত ওজন বা অনেক কম ওজন গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে তা অতিরিক্ত অ্যাস্ট্রোজেন তৈরি করে। এটি ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।

নারীর বয়স ৩৫ বছরের উপরে হলে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পর ছয় মাসের মধ্যে সন্তান সম্ভবা না হলে নারী ও পুরুষ উভয়কে বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করাতে হবে।

গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই যে লক্ষণ প্রকাশ পায় জেনে নিন

একজন নারী যখন গর্ভধারণ করেন তখন বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ তার শরীরে প্রকাশ পায়। তবে প্রাথমিক অবস্থা পিরিয়ড মিস হলে ধরে নেওয়া হয় তিনি গর্ভবতী। তবে গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই শরীরে প্রকাশ পায় একাধিক লক্ষণ।। আজকের আর্টিকেলে এই লক্ষণগুলো নিয়েই আলোচনা করব।

>> মর্নিং সিকনেস যাকে বলে সকালে ঘুম থেকে উঠে দুর্বল বা ক্লান্তি অনুভব করা। দিনে বা রাতে যে কোন সময় এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে। সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই এই সমস্যা দেখা দেয়।

>> কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীর ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয়। প্রথম তিন মাস এই সমস্যা হতে পারে হরমোনের পরিবর্তনের ফলে এই ডিসচার্জ হয়।

>> পিরিয়ডের তারিখ ছাড়াও যদি হঠাৎ কখনো ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হয়, তাহলে প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং, স্পোর্টিং প্রেগনেন্সির দিকে ইঙ্গিত দিয়ে থাকে।

>> শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে নানা কারণে। গর্ভধারণকালে প্রোজেস্টেরনের স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি হতে পারে।

>> স্তনে ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা ভারি হওয়া গর্ভধারণের একটি লক্ষণ। কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে স্তনে ব্যথা শুরু হয়।

>> গর্ভধারণের চার থেকে ছয় সপ্তাহের পর বমি শুরু হয় তবে অনেকের ক্ষেত্রে এটা অনেক আগেও হতে পারে। সকালে বমি ভাবটা বেশি হয়ে থাকে তবে দিনে যে কোন সময় হতে পারে।

>> প্রথম সপ্তাহে মুখে অন্যরকম স্বাদ বুঝতে পারবেন। অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে কারণ এ সময় শরীরের বিভিন্ন ধরনের হরমোনের তারতম ঘটে থাকে।

>> গর্ভে সন্তান এলে নারীরা অতিরিক্ত পরিমাণে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি গর্ভবতী হয়েছেন এমন স্বপ্নই দেখেন তারা।

>> মুখে বা হাতে-পায়ে কালো কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। গর্ভধারণের সময় ত্বকের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায় এর ফলে চেহারায় এই কালো দাগ দেখা যেতে পারে।

>> গর্ব অবস্থায় মাথার যন্ত্রণা হতে পারে। শুরুতে মাথাব্যথা শুরু হয়ে থাকে এটাও হরমোন উঠানামা করার কারণে হয়ে থাকে।

>> ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া এ সময় স্বাভাবিক একটি বিষয়। এটা গর্ভধারণের প্রথম দিকেই লক্ষ্য করা যায়।

>> গর্ভবতী মহিলার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে, আবার ওজন দ্রুত কমেও যেতে পারে।

>> নির্দিষ্ট কিছু খাবারের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হবে এবং কিছু খাবারে অনীহা তৈরি হবে। অর্থাৎ কিছু খাবারে বাজে গন্ধ অনুভব করতে পারে।

গর্ভকালীন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কেন হয় এবং কিভাবে দূর করবেন জানুন

গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে একটি অন্যতম সমস্যা হল গ্যাসের সমস্যা বা পেট ফাঁপা। এতে যেকোনো সময় যেকোনো মানুষের জন্য অনেক অস্বস্তির একটি কারণ। আর গর্ভাবস্থায় এটি বেশি হয় বলে মা শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে কিছুটা হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন।

গ্যাস সাধারণত দুভাবে পরিপাকনালীতে জমা হয়। যখন মুখ দিয়ে বাতাস ভেতরে ঢুকে এবং যখন শরীরের বৃহতান্ত্রে ব্যাকটেরিয়া হজম না হওয়া খাবার ভাঙতে থাকে।

মুখ দিয়ে ঢোকা বেশিরভাগ বাতাস সাধারণত ঢেকুর এর মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, তবে অল্প কিছু বাতাস বৃহতান্ত্রে রয়ে যায় এবং বায়ুত্যাগের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়।

গর্ভাবস্থায় গ্যাসের সমস্যা বেশি হওয়ার প্রধান কারণ হলো প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। প্রোজেস্টেরন হরমোনের কারণে মায়েদের শরীরের পেশিগুলো শিথিল হয়ে পড়ে।

আর মায়ের পরিপাকতন্ত্রের পেশীগুলো এসো মা অপেক্ষাকৃত শিথিল হয়ে যাওয়ার ফলে মায়েদের খাবার বেশ ধীরে হজম হয়। এর ফলে শরীরের গ্যাস সহজে বাড়তে থাকে এবং ঢেকুর বা বায়োটেক এর মাধ্যমে সেগুলো শরীর থেকে বেরিয়ে আসে।

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই সমস্যারও বাড়তে পারে। গর্ভাবস্থায় কিছু ভিটামিন বা সাপ্লিমেন্ট গঠন করার কারণে এর পার্শ্ব প্রতিক্রি হিসেবে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। যেমন-আইরন সাপ্লিমেন্ট এর কারণে পোস্ট কাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

সবচেয়ে অস্বস্তিকার বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় মায়ের পেশী শিথিলতার বৃদ্ধির ফলে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে ওঠে।

গর্ভাবস্থায় গ্যাসের সমস্যা পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয় তবে কিছু কিছু অবলম্বন করলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। গ্যাসের সমস্যা যেহেতু খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমেই হয়ে থাকে তাই কিছু কিছু খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে পারলে গ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। 

অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, জুস কিংবা সফট ড্রিংস, চিনি সমৃদ্ধ খাবার গ্যাসের সমস্যা বাড়ানোর সাথে সাথে গর্ভবতী মা ও ভ্রূণের স্বাস্থ্যের বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই এ ধরনের খাবার সবসময়ই বর্জন করে চলতে হবে।

কিন্তু সাধারণত যেসব খাবার স্বাস্থ্যকর কিন্তু কারো কারো গ্যাসের সমস্যা হয় সেগুলো হলো, রসুন, পেঁয়াজ, ব্রকলি ও বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য, দুগ্ধ জাত খাবার ইত্যাদি খেলে অনেকের গ্যাসের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।

তবে কিছু কিছু খাবার খেলে গ্যাস কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেমন আঁশ জাতীয় খাবার। আর জাতীয় খাবার আমাদের অন্ত্রে পানি ধরে রেখে ময় নরম রাখতে সাহায্য করে যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় এবং গ্যাসের সমস্যাও কমায়।

তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকা জাতীয় খাবার রাখতে পারলে এ সমস্যা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

পেটে গ্যাস হওয়ার সমস্যা থাকলে তিনবেলা ভর পেটে খাবার গ্রহণের পরিবর্তে ঘনঘন বিরতি দিয়ে অল্প অল্প খাবার গ্রহণ করতে হবে। এভাবে খেলে খাবার সঠিকভাবে হজম হবে এবং গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।

পেট ফুলে থাকা বা গ্যাসের সমস্যা সাধারণত হয়ে থাকে খাবার ভালোভাবে হজম না হওয়ার কারণে। ভালো করে চিবিয়ে খাবার খেলে তার সহজে হজম হয়। হলে গ্যাসের সমস্যা কম হয়। 

ধীরে ধীরে খাবার খান কারণ দ্রুত খাবার খাওয়ার কারণে খাবারের সাথে কিছু বাতাস পেটে ঢুকে যায় এবং সেখান থেকে গ্যাসের সৃষ্টি হয়।

খাওয়ার সময় বেশি পানি না খেয়ে বারবার বিরতি দিয়ে পানি পান করার চেষ্টা করুন। গ্লাস বা কাপে ঢেলে পানি পান করুন বোতল থেকে বাস্টোয়া দিয়ে পানি পান না করাই ভালো। এতে পানির সাথে সাথে বাতাসও পেটে ঢুকে যায় ফলে গ্যাসের সৃষ্টি হয়।

এই সময় কাপড় বা বেল্ট পরে এড়িয়ে চলতে হবে এসবের কারণে অন্ত্রে চাপ পড়তে পারে যাতে খাবার পাকস্থলীতে পৌঁছাতে বাধা পায়। গর্ভাবস্থায় পেটে টাইট করে ফিতে বেঁধে রাখা অনেক প্রচলিত একটি ভুল পদ্ধতি এ সময় ঢিলেঢালা আরামদায়ক কাপড় পরা উচিত।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস তাদের কারণে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই গর্ব অবস্থায় স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন। ঘরের কাজকর্ম ভাগ করে নিন কিছুক্ষণ নিজের জন্য সময় বের করার চেষ্টা করুন এবং রিলাক্স করুন।

হালকা কিছু ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন যেমন সতর্কতা অবলম্বন করে হাঁটাহাঁটি করলে গ্যাসের সমস্যা কমে যেতে পারে।

যদি খুব বেশি সমস্যা হয় তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় যে ওষুধই সেবন করা হোক না কেন তা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা যাবে না।

গর্ভাবস্থায় গ্যাস একটি স্বাভাবিক বিষয় তবে সে সমস্যাটি গ্যাসের কিনা এটা খেয়াল রাখতে হবে। যদি গ্যাসের অস্বস্তিতে খুব বেশি পেট ব্যথা হয়, মলের সাথে রক্ত যায়, তীব্র ডায়রিয়া হয়, বমি বমি ভাব হয় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারকে জানানো জরুরী।

পরিশেষে

প্রিয় বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন আমি আশা করি আপনারা গর্ব অবস্থায় কি ধরনের যত্ন নেওয়া উচিত কি ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন পাশাপাশি উপকৃত হয়েছেন।

আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন। আবার দেখা হবে কোন এক আর্টিকেলে সে পর্যন্ত আমাদের পাশে থাকুন সবশেষে আমি আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url