কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায় How to earn money from YouTube channel | Rahul IT BD

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায় How to earn money from YouTube channel

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো অনেকেই কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায় এবং ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায় সম্পর্কে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন। এই আর্টিকেলটিতে এই বিষয়ে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায়
আপনি যদি এই সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনাকে স্বাগতম।

ভূমিকা

প্রিয় বন্ধুগণ ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করার পাশাপাশি টাকা তোলার উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়বেন। কারণ আজকের এ পোস্টটিতে ইউটিউবে প্রতি ১০ লাখ ভিউয়ের আয় কত। 

ইউটিউব থেকে টাকা পাওয়ার পদ্ধতি, ইউটিউব থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি এবং ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রতি ১০ লাখ ভিউয়ে আয় কত জানতে পড়ুন

ইউটিউব থেকে আয়ের বিষয়টি নির্ভর করে যে আপনি কোন ধরনের ভিডিও তৈরি করছেন সেটার উপরে। ভিডিওটি কোন কোন দেশ থেকে দেখেছে এবং সেসব দেশের বিজ্ঞাপন রেট কেমন হবে সেটার উপরে। একটি ভিডিওর ভিউ ১০ লাখের বেশি হলে সে নির্মাতা এই ভিডিও থেকে ভালো ইনকাম করেছেন এটা মনে করতে পারি। 


অনেক সময় একটি ভিডিও থেকেও ১০০০০ ডলারেরও বেশি ইনকাম হয়ে থাকা, ভিডিওর কোয়ালিটি ভালো হলে যথেষ্ট দর্শক টানা সম্ভব। তাহলে ইউটিউবে প্রতি ১০০০০০ ভিউয়ে আয় কত সেটা নির্ভর করছে চ্যানেলের বিষয়বস্তু, দর্শকের প্রতি ক্লিকের মূল্য, প্রমোশন পদ্ধতি এবং অন্যান্য সেটআপ পাশাপাশি প্রচারের টেকনিক এর উপরেও নির্ভর করে।

ইউটিউব থেকে টাকা পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

ইউটিউব থেকে টাকা পাওয়ার পদ্ধতি ও ইউটিউব থেকে টাকা পাওয়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় স্টেপ ফলো করতে হবে। যেমন-ইউটিউবে একটি চ্যানেল তৈরি করতে হবে, গুণগত ভিডিও তৈরি করতে হবে, চ্যানেলটি কমপক্ষে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে, ভালো ক্যামেরা মাইক্রোফোন থাকতে হবে। 

এক হাজার সাবস্ক্রাইবার এর সাথে আয় করার জন্য বিগত বারো মাসে কমপক্ষে চার ঘন্টা ভিউ থাকতে হবে। মনিটাইজেশন সিলেক্ট করতে হবে এছাড়াও টি-শার্ট, মগ, ব্যাগ সহ নিজস্ব মার্চেন্ডাইস বিক্রি করার মাধ্যমে ইনকাম করা যায় পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ও রোজগার আরো বাড়ানো যেতে পারে।

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায়? 

বর্তমানে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার অনেকগুলো উপায় আছে তার মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হল ইউটিউব থেকে ইনকাম। আমাদের দেশের অনেক ছেলে মেয়ে এখন ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করছে। দেখা যায় প্রতি মাসে তারা কয়েক হাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। 

এর জন্য একটা সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। প্রথমে একটা নিশ বাছাই করতে হবে। অর্থাৎ যে বিষয়ে আপনি ভিডিও বানাবেন সেটা আগে ঠিক করতে হবে যে আমি কোন বিষয়ের উপরে ভিডিও বানাবো, তারপর ইউটিউবে একটা চ্যানেল খুলতে হবে। 

চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে এবং চ্যানেলটি মনিটাইজেশন করতে হবে। আপনি কি ধরনের ভিডিও বানাবেন এবং কোন ধরনের দর্শককে আপনি টার্গেট করবেন ইংরেজিতে না বাংলাতে ভিডিও বানাবেন।

কিভাবে আপনি আপনার ভিডিওর সাবস্ক্রাইবার বাড়াবেন কিভাবে আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করবেন মনিটাইজেশন করার পরে কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা যায় বা আয় করতে পারবেন সে সব বিষয়ে নিচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলোঃ


নিশ নির্বাচন করুনঃ এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় যে আপনি ভিডিও বানাবেন কি ধরনের বিষয়ের উপর ভিডিও বানাবেন সে বিষয়টা আগে নির্বাচন করতে হবে সেটা কি নিশ নির্বাচন বলা হয়ে থাকে। আপনি যে বিষয়ে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করবেন যাতে সে বিষয়ের উপরে আপনার ভালো একটু জ্ঞান রয়েছে এমন নিশ আপনাকে বাছাই করতে হবে। যেমন-
  • যে রান্নাবান্নার ভিডিও হতে পারে
  • গেমিং চ্যানেল
  • অনলাইনে আয় করার বিভিন্ন উপায়
  • ব্লগিং নিয়ে ভিডিও করা যেতে পারে
  • যে কোন বিষয়ের টিপস এন্ড ট্রিকস নিয়ে ভিডিও করা যেতে পারে
ইউটিউব চ্যানেলের নাম বাছাই করতে হবেঃ ইউটিউব চ্যানেল খোলার আগে একটা নাম সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যে ধরনের ভিডিও তৈরি করছেন বা যে ধরনের ভিডিও আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করবেন সেই রিলেটেড ইউটিউব চ্যানেলের নাম হওয়া উচিত। 

চ্যানেলের নাম অবশ্যই সহজ উচ্চারণ, কি হওয়া উচিত যাতে দর্শকরা এই চ্যানেলের নামটাকে মনে রাখতে পারে।

দর্শক টার্গেট এবং ভাষা নির্বাচনঃ ইউটিউব চ্যানেল খোলার আগে দর্শক টার্গেট করা এবং ভাষা নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। আপনি যে ভিডিওগুলো বানাচ্ছেন সেগুলো কোন ধরনের দর্শককে টার্গেট করে করবেন কোন ভাষার মানুষগুলোকে টার্গেট করে করবেন সেগুলো নির্বাচন করা উচিত। 

আমি যদি বাংলা ভাষায় ভিডিও তৈরি করেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ পাশাপাশি কলকাতার মানুষ বাংলা ভাষায় কথাবার্তা বলে অর্থাৎ আপনি দুই বঙ্গের বাংলা ভাষার মানুষগুলোকে দর্শক হিসেবে পেতে পারেন।

নিজের বিজনেস বা ব্র্যান্ডের নামে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেনঃ আপনি যদি আপনার বিজনেস বা ব্র্যান্ডের নামে youtube চ্যানেল খুলে আপনার ব্যবসা কে প্রচার এবং প্রসার ঘটাবেন তাহলে ইউটিউবে আপনার ব্যবসার নামে বা ব্র্যান্ডের নামে চ্যানেল খুলতে পারেন। 

চোখে ধরার মতো শিরোনাম এবং সঠিক তথ্য দিতে হবে যাতে মানুষের আপনার বিজনেস বা ব্যবসার প্রতি আস্থা তৈরি হয়।

চ্যানেলকে সাজিয়ে গুছিয়ে তোলা উচিতঃ আপনার youtube চ্যানেলকে সফল করে তুলতে চাইলে অবশ্যই আপনার চ্যানেলকে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করা উচিত অর্থাৎ আপনার চ্যানেলের প্রোফাইল পিকচার খুব সুন্দর হওয়া উচিত, চ্যানেলের ব্যানার এবং ভিডিওর ওয়াটার মার্ক চমৎকার হওয়া উচিত কারণ এগুলো আপনার চ্যানেলের পরিচয় বহন করে থাকে।

ইউটিউব চ্যানেল খুলুনঃ আপনি আপনার জিমেইল একাউন্ট দিয়ে ইউটিউব একাউন্ট করতে পারবেন পাশাপাশি ভিডিও আপলোড করতে পারবেন প্রথম অংশে আপনার চ্যানেলের একাউন্ট সেটআপ করতে হবে।

নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবেঃ অ্যাকাউন্ট খোলার পর নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে। নিজের ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে ভিডিও তৈরি করে, সুন্দর কনটেন্ট তৈরি করে নিজের চ্যানেলে ভিডিও আপলোড দেওয়া উচিত। অন্যের ভিডিও আপনার চ্যানেলে আপলোড কখনোই করবেন না কারণ এটা কপিরাইট ইস্যু হবে। 

আপনি যখন ভিডিও আপলোড করবেন তখন ভিডিও কে এসইও করতে হবে, এর টাইটেল ট্যাগ ভিডিওর বিষয়বস্তুগুলো লিখতে হবে, যাতে কেউ সার্চ করলে আপনার ভিডিওটি খুঁজে পাই।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার চ্যানেলকে প্রচার করতে হবেঃ আপনার আপলোডকৃত ভিডিও এবং আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে দর্শকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ভিডিও বা চ্যানেলকে প্রচার করতে হবে। 

যেমন facebook instagram twitter এ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ারের মাধ্যমে আপনি আপনার চ্যানেলটাকে দর্শকদের মাঝে ব্যাপক পরিচিতি ঘটাতে পারেন।

এনালিটিক্স এর মাধ্যমে পারফরম্যান্স মনিটর করতে হবেঃ এ ধরনের টুলস এর মাধ্যমে আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে ভিউজ এর পরিমাণ সাবস্ক্রাইব কতজন ইত্যাদি এমন বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।

মনিটাইজেশনের জন্য আবেদনঃ আপনার চ্যানেল মোটিভেশনের জন্য অবশ্যই আবেদন করতে হবে এক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০ সাবস্ক্রাইবার অবশ্যই থাকতে হবে পাশাপাশি সমস্ত ভিডিওতে চার ঘন্টা ভিউ থাকতে হবে তবেই আপনি মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায় জেনে নেওয়া যাক

এখন এডসেন্স থেকে আয় করা টাকা পাওয়ার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম গুগল এডসেন্সের পেমেন্ট অপশনে যেতে হবে তারপর নিজের ব্যাংক একাউন্ট এর তথ্য ভালো করে সেখানে দিতে হবে এবং অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা হলে প্রতি মাসের ২০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন সরাসরি ব্যাংক থেকে। 

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার জন্য এডসেন্স একাউন্টে কমপক্ষে ১০০ ডলার থাকা লাগবে।

ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল নাকি হারাম? হুজুররা কি বলে জানুন

ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল নাকি হারাম হবে সেটা অনেকটা নির্ভর করছে যে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কোন ধরনের ভিডিও আপলোড করছেন আর যদি বিজনেসের ক্ষেত্রে হয় তাহলে কোন ধরনের প্রোডাক্ট আপনি সেল করার জন্য ইউটিউব এর মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করছেন। 

এখন যদি দেখা যায় যে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে হারাম প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করছেন মাদক জাতীয় দ্রব্য তাহলে নিঃসন্দেহে সেটা হারাম হবে। অন্যদিকে আপনি যদি হালাল প্রোডাক্ট সেল করার জন্য মার্কেটিং করেন। 

ভালো ভিডিও তৈরি করেন যেটা ইসলামের রীতিনীতি অনুযায়ী হালাল তাহলে youtube থেকে যে ইনকাম আসবে সে ইনকামটি আপনার জন্য হালাল হবে।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই  ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা যায় এবং ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমি আশা করি আর্টিকেলটি আপনার উপকৃত হয়েছেন। 

এ ধরনের নিয়মিত আর্টিকেল সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে থাকুন। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। সবশেষে আমি আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url