ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানুন | Rahul IT BD

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক আপনি কি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে ক্লিক করেছেন। কারণ এই পোস্টটি নাকি এই সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার সকল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকবে।

তাই আপনি যদি এসব বিষয় না জেনে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আমি আশা করি আপনি উপকৃত হবেন। তাই আর দেরি না করে এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।

ভূমিকাঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা অপকারিতা

প্রিয় বন্ধুগণ আমরা অনেকেই আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অবগত নয়। তাই আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমরা বিভিন্ন খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকি এবং তার মাধ্যমে আমরা অনেক বিষয়ে জানতে পারি।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা অপকারিতা
আপনাদের সুবিধার জন্য এই পোস্টটিতে এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আপনারা যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আপনি আর দেরি না করে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন।

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

ত্বক ও চুলের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। চুল পড়া রোধে কিংবা ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় ই ক্যাপ বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

এর অনেক ভালো গুনাগুন রয়েছে তবে কখনো কখনো ব্যবহারের ভুলের কারণে খারাপ প্রভাব পড়তে দেখা যায়। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা এবং অপকারিতা আসুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ই ক্যাপ এর উপকারিতা-
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মূলত মুখে খাওয়া হয় এবং প্রয়োজনে বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শরীরে যদি ভিটামিন ই এর অভাব দেখা যায় সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি খেতে হবে। 

তাহলে ভিটামিন ই জনিত সকল সমস্যা দূর করা সম্ভব।তবে এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে এর সঠিক নিয়ম জানতে হবে।

ভিটামিন-ই শরীরের কোষগুলিকে সতেজ রাখতে সবচেয়ে বেশি কাজ করে থাকে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, পেশির দুর্বলতা দূর করতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো সরবরাহ করে থাকে।

এছাড়াও এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে থাকে। নিম্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলো-

ত্বকের উজ্বলতায় ভিটামিন ই ক্যাপ:

ই ক্যাপ আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এতে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের ত্বক এবং মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিয়ে তার সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে সারারাত রাখতে হবে এভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল, কোমল এবং মসৃণ হবে।

ই ক্যাপ সানস্ক্রিন হিসেবে
ভিটামিন ই ক্যাপসুল সান টেন দূর করতে সাহায্য করে। কয়েক ফোটা ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেল মিশিয়ে রাতে যে ক্রিম ব্যবহার করেন তার সাথে মিক্স করে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মশ্চারাইজিং গুণের জন্য বেশ সমাদৃত। এটা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

তেলটি সিরাম হিসেবে কাজ করবে এবং সারারাত ত্বককে পুষ্টি ও আর্দ্র রাখতে সাহায্য করবে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল কে সানস্ক্রিন ক্রিম হিসেবে ইউজ করতে পারেন। বাইরে বের হওয়ার আগে একটি ই ক্যাপ নিয়ে ভালোভাবে ফেঁসে এবং হাতে লাগালে সূর্যের অতিবেগুনে রশি ত্বকের ক্ষতি করতে পারেনা।

শীতকালে ত্বক ও ঠোটের পরিচর্যায় ই ক্যাপ

শীতকালে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করলে ত্বক ও ঠোট শুষ্ক হয়ে যায় না। ভিটামিন ই ক্যাপসুলে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। শীতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ত্বক ও ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়। 

আর এটি ত্বক ও ঠোট এর কোষগুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, যা ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে। 

তাই যাদের শীতকালে ত্বক ও ঠোঁট শুকিয়ে যায় এই সমস্যার সমাধান পেতে হলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন মশ্চারাইজার হিসেবে। এতে ত্বক ও ঠোট নরম, কোমল এবং আর্দ্র থাকবে।

ডার্ক সার্কেল দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপ

ডার্ক সার্কেল, বলিরেখা দূর করতে কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে ভিটামিনের ক্যাপসুলের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি একটি শক্তিশালী আন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান যা ত্বকের কোষ গুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।

ডার্ক সার্কেল হলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। সাধারণত ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত স্ট্রেস, ক্লান্তি বা অনেক সময় হরমোন জনিত কারণে ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করলে চোখের নিচের ত্বক মসৃণ হয়, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ফলে ডার্ক সার্কেল দূর হয়ে যায়।

ত্বকের বিভিন্ন বলিরেখা, কুঁচকে যাওয়া ত্বক ও অন্যান্য দাগ দূর করতেও উপকারী ভিটামিন ই ক্যাপসুল। আন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই উপাদানটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। 

এটি এন্টি এজিং ক্রিম হিসাবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ত্বকের ভিটামিন ই ক্যাপসুল মালিশ করলে ত্বকের গঠন স্বাস্থ্যকর হয় এবং উজ্জ্বলতা বাড়ে।

প্রতিদিন কোন মশ্চারাইজার বা সানস্কিনের সাথে একটি ই কাপ মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে কয়েক মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দুই বা তিন দিন পর পর ব্যবহার করলে ত্বকের বলিরেখা দূর হয়। এভাবে চোখের নিচে ব্যবহার করলে ডার্ক সার্কেল দূর করা সম্ভব।

স্কিন মাস্ক হিসাবে ই ক্যাপ উপকারি
ভিটামিন ই ক্যাপসুল স্কিন মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এজন্য একটি পাত্রের ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে এর সাথে দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ডিমের মিশ্রণের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

এবারে মিশ্রণটি ত্বকে লাগাতে হবে কয়েক মিনিট রাখার পর যখন টানটান হবে তখন পানি দিয়ে ওয়াশ করে নিতে হবে। এই মাস্কটি ব্যবহারের ফলে ত্বক নরম হবে, ত্বকের লোমকূপ বড় হওয়া সমস্যা দূর হবে।

চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপ

ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলপোড়া বন্ধ করতে এবং নতুন চুল গজাতে অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। সাধারণত চুলে যে তেল ব্যবহার করেন তার সাথেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিয়ে তার চুল ও মাথার ত্বকে ভালোভাবে ব্যবহার করে দু তিন ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। 

কুসুম গরম পানি ব্যবহার করলে বেশি ভালো হয়। সপ্তাহে দুদিনে তেল ব্যবহার করা ভালো। কয়েকদিন ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

ক্ষতস্থান পূরনে ই ক্যাপ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল শরীরে কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষত হয়ে গেলে সেটা পূরণ করতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহার করা যায় আবার খাওয়ার ফলেও উপকার পাওয়া যায়। ক্ষতস্থানে ই ক্যাপ লাগালে বা নিয়মিত ই কাপ খেলে ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে যায়।

বয়সের ছাপ দূর করতে ই ক্যাপ

ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যাদের অল্প বয়সেই বয়স্ক মনে হয় বা শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে যায় তারা নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করলে বা নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে বয়সের ছাপ দূর হয়ে যাবে। 

এটি এন্টি এজিং হিসাবে কাজ করে যে কারণে তাকে বয়সের ছাপ থাকলে তা দূর হয়।

বয়স অনুযায়ী ভিটামিন ই ক্যাপসুল
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, বয়স ভেদে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। শিশুদের ক্ষেত্রে ছয় মাস পর্যন্ত প্রতিদিন চার মিলিগ্রাম করে ভিটামিন ই ক্যাপ খাওয়ানো যেতে পারে। 

৭ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ মিলিগ্রাম করে ভিটামিন ই, এক থেকে তিন বছরের বাচ্চার জন্য প্রতিদিন ছয় মিলিগ্রাম করে ভিটামিন ই প্রয়োজন।

চার থেকে আট বছর বয়স পর্যন্ত ৭ মিলিগ্রাম করে ভিটামিন ই, ৯ থেকে ১৩ বছরের বাচ্চার জন্য প্রতিদিন ১১ মিলিগ্রাম করে ভিটামিন ই এবং ১৪ বছরের উর্ধ্বে ১৫ মিলিগ্রাম থেকে 19 মিলিগ্রাম করে ভিটামিন ই খাওয়া যেতে পারে।

ই ক্যাপ এর অপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুল উপকারী একটি উপাদান। এর গুনাগুন বলে শেষ করা যায় না। এর যেমন অনেক উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু অপকারিতা ও লক্ষ্য করা যায়। অতিরিক্ত কোন জিনিস ব্যবহার করাই ভালো নয়। ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ক্ষেত্রে ও ব্যতিক্রম কিছু নয়। 

অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। নিচে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কিছু অপকারিতা তুলে ধরা হলো:
  • অতিরিক্ত ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হতে পারে এমনকি ডায়রিয়া পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে বা ব্যবহার করার ফলে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের শরীরে অ্যালার্জি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে পেট ব্যথা এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করার ফলে যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • তাই ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে বা ব্যবহার করার কারণে যদি উপরোক্ত এরকম কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার বা ব্যবহারের চেষ্টা করবেন।

পরিশেষে

প্রিয় বন্ধুগণ আপনি যদি আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর গুনাগুন সম্পর্ক জানতে পেরেছেন পাশাপাশি উপকৃত হয়েছেন। এ ধরনের আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করতে থাকেন।

আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সে পর্যন্ত আমাদের পাশেই থাকেন। সবশেষে আমি আপনার পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্যতা কামনা করে, আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url