খেজুরের গুড়ের উপকারিতা-সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন | Rahul IT BD

খেজুরের গুড়ের উপকারিতা-সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক এই পোস্টটিতে খেজুরের গুড়ের উপকারিতা, আখের গুড়ের উপকারিতা, খেজুরের গুড় ও আখের গুড় চেনার উপায় এবং খেজুরের রস ও খেজুরের গুড় কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা
আপনারা অনেকেই এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হয়তো জানেন না। তাই যারা জানতে খুবই আগ্রহী তাদেরকে আজকের এই আর্টিকেলে স্বাগতম।

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আপনারা জানেন যে আমরা বাঙালিরা শীতকালে গুড় দিয়ে শীতের পিঠা খেতে অনেক পছন্দ করি। এই খাবারগুলোতে অনেক নিউট্রিশন থাকে অনেক পুষ্টি থাকে চিনির বিকল্প হিসাবে আমরা এই গুড় ব্যবহার করে থাকি তবে গুড় অবশ্যই অর্গানিক এবং খাঁটি হতে হবে। চিনির বিকল্প হিসেবে গুড়  অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস।

খেজুরের গুড়ের উপকারিতা-সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

শীতকালে দেখতে পাওয়া যায় মাটির হাঁড়িতে করে বিক্রি হয় খেজুরের গুড় । শীতকালে পাটিসাপটা পিঠা, রস পিঠা, পায়েস ইত্যাদি বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারে আমরা খেজুরের গুড় ব্যবহার করে থাকি আর পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করে সেগুলো খেয়ে থাকি। 

একসাথে বসে সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা ঠান্ডা রসালো পিঠা খেতে পছন্দ করি। এই খেজুরের গুড় যে শুধু স্বাদের জন্যই খেয়ে থাকি তা কিন্তু নয় এর অনেক উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ রয়েছে। যদিও খেজুরের গুড় শুধু শীতকালেই পাওয়া যায় তারপরও শীতকালে যদি নিয়মিত খাওয়া যায় আমাদের শরীরের জন্য তা খুবই কার্যকারী। 

খেজুরের গুড় খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে। ফলে দূষিত রক্তের ফলে যে সমস্ত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে সব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও খেজুরের গুড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, নিয়মিত খেজুরের গুড় খেলে হজমের সমস্যাও থাকে না। 


এমনকি বদ হজম কোষ্ঠকাঠিন্য আমাশয়ের মত রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। তাই খাওয়া দাওয়ার পরে খেজুরের গুড় খাওয়া যেতে পারে হজম ভালো করার জন্য। খেজুরের গুড় লিভারকে সুস্থ রাখে এতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম যা পেশীকে শক্তিশালী করে। 

অতিরিক্ত মেদ ও ঝড়ায় ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি ব্লাড প্রেসার কেও নিয়ন্ত্রণ করে। খেজুরের গুড় খেলে ত্বকের বয়সকেও ধরে রাখা যায় অর্থাৎ বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়। এই খেজুরের গুড় বিভিন্ন স্ত্রী জাতীয় রোগের সমাধান করে থাকে। 

গুড় আমাদের শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে ফলে সর্দি কাশি এ ধরনের সাধারণ অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে রাখে। চিনি যেমন রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে বা গ্লুকোজ মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে তোলে কিন্তু গুড় সেক্ষেত্রে তেমনটা নয়। 

গুড় রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া এটি হয় না। তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন যে খেজুরের গুড় শুধু স্বাদের জন্য নয় শারীরিক উপকারিতার জন্য খেজুরের গুড় খাওয়া উচিত।

খেজুরের গুড় কোথায় পাওয়া যায়-তা জানুন

ভালো খেজুরের গুড় দেশের বিভিন্ন জাগাতে পাওয়া যায় তবে যে জায়গার নাম সব থেকে বেশি শোনা যায় এবং যে জায়গা খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত সেই জায়গার নাম হলো যশোর। যশোরের খাঁটি খেজুরের গুড় সারা বাংলাদেশ ব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে এবং প্রসিদ্ধ খেজুরের গুড় পেতে যশোর থেকে সরাসরি নিতে পারেন। 


এমনকি বাংলাদেশ একটিমাত্র জায়গাতেই শুধুমাত্র খেজুরের গুড়ের মেলা হয়ে থাকে সেটাও কিন্তু যশোরে। বিশেষ করে শীত মৌসুম আসার আগে এই মেলার আয়োজন করা হয়। যশোরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে  প্রায় শতাধিক মানুষ আসে খেজুরের গুড় নিয়ে। 

তারা বিভিন্ন দামে খেজুরের গুড় বিক্রি করে থাকে। যশোর চৌগাছায় হয়ে থাকে এই খেজুরের গুড়ের মেলা। তাই ভালো খেজুরের গুড় পেতে চাইলে আপনারা যশোরে চলে আসতে পারেন।

খেজুরের রস কোথায় পাওয়া যায়-জেনে নিন

বন্ধুরা শীতকালে খেজুরের রস খেতে আমরা সবাই পছন্দ করি কিন্তু এই খেজুরের রস খাওয়ার সৌভাগ্য সবার হয়ে ওঠে না। অনেকের শহর থেকে গ্রাম অঞ্চলে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য চলে আসে আবার অনেক গ্রামের মানুষও জানে না যে কোথায় ভালো খেজুরের রস পাওয়া যায়। 

ভালো খেজুরের রস পেতে হলে খুব সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে খেজুরের রস পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়। যেটা আমরা ছোটবেলায় অনেক করেছি।  

যশোরে প্রায় প্রত্যেকটি অঞ্চলে রাস্তার দুপাশে প্রচুর পরিমাণে খেজুরের গাছ দেখতে পাওয়া যায় অনেক পরিবারের ইনকাম বড় উৎস এই খেজুরের গুড় এবং খেজুরের রস।

আখের গুড়ের উপকারিতা-বিস্তারিত জানুন

পিওর আখের গুড় আমাদের শরীরের জন্য ভালো। আপনি যদি প্রতিদিন আখের গুড় খেতে চান সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক থেকে দেড় চা চামচ আখের গুড় খেতে পারবেন অবশ্যই সেটি অর্গানিক এবং খাটি হতে হবে। 

আখের গুড় শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে এতে রয়েছে উচ্চ মানের ক্যালরি যা শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং শক্তি যোগায়। শ্বাসযন্ত্রের কোন সমস্যা যেমন কাশি বা বুকে কফ জমাট বাধা রক্ত প্রবাহের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এই আখের গুড়। 


এটি পাকস্থলী ফুসফুস খাদ্যনালী সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শীতের শুষ্ক ও ঠান্ডায় জীবাণুর হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম সোডিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। 

আখের গুড়ের মধ্যে নিউট্রিশন চিনির থেকে অনেক বেশি থাকে। আমাদের পেট খারাপ হলে আমরা অনেক সময় গুঁড়ে তৈরি স্যালাইন খেতে পারি হজমের জন্য গুড় খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাবার। বাচ্চাদের জন্য এই স্যালাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শরীরের জন্য খুবই ভালো।

আখের গুড় চেনার উপায়-এই পদ্ধতি দারুন কার্যকর

আখের গুড় প্রায় প্রতিনিয়ত আমরা খেয়ে থাকি বিশেষ করে রমজান মাসে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমরা রমজান মাসে ইফতারের সাথে আখের গুড় দিয়ে লেবুর রস মিশিয়ে শরবত খেতে অনেক পছন্দ করি এতে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়। 


বাজার থেকে আখের গুড় কিনে এনে এক গ্লাস পানিতে আখের গুড় মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে যদি দেখা যায় গ্লাসের তলে কিছু দেখা যাচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে যে আখের গুড়ের মধ্যে ভেজাল মেশানো হয়েছে। 

অর্থাৎ গ্লাসের নিচে যদি তলানি পরে তাহলে বুঝতে হবে যে গুড় সম্পূর্ণ ভেজাল। এভাবে আপনি ঘরে বসে ভেজাল আখের গুড় চিনতে পারবেন।

খাঁটি খেজুর গুড় চেনার উপায়-শতভাগ কার্যকরী

খেজুরের গুড়ের মধ্যে যদি কেমিক্যাল বা সাগারিন ইত্যাদি মেশানো হয় তাহলে আসলে খেজুরের গুড়টা তখন আর খাঁটি থাকে না। প্রায় সমস্ত খাবারের মধ্যে এখন ভেজাল মেশানোর কারণে জনগণের কাছে আস্থা অর্জন করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। 

তাই কোনভাবেই আমরা যদি অর্গানিক খেজুরের গুড় জনগণের মাঝে চেনাতে পারি তাহলে অবশ্যই বিক্রি বেড়ে যাবে। খেজুরের গুড়ের মধ্যে ভেজাল থাকলে গুড় তিতা তিতা লাগবে আবার দুধের মধ্যে যদি মেশানো হয় তাহলে দুধটা কেটে যাবে। 

পাটালি গুড় যদি আপনি নেন সেক্ষেত্রে চেনার উপায় হলো অল্প একটু পাঠালি গুড় দুই আঙ্গুল দিয়ে নিয়ে চাপ দিলে যদি মোমের মত গুড়া হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন যে এটা খাঁটি আছে আর যদি  চিনি বা সাগারিন থাকে তাহলে সেটা মোমের মত বলবেনা অনেকটা শক্ত হয়ে থাকবে।

পরিশেষে

প্রিয় বন্ধুগণ আপনারা যারা এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়েছেন আশা করি তারা এই বিষয়ে সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছেন এবং আমি আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এ ধরনের আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন। সবশেষে আমি আপনাদের সকলের কল্যাণ কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url