রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
প্রিয় বন্ধুগণ এই আর্টিকেলে রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, আজকের আর্টিকেলটি মূলত তাদের জন্য।
তাই শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন, আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
ভূমিকা
প্রিয় বন্ধুগণ আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কারণে-অকারণে, আবার অনেক সামান্য ব্যাপারে রেগে যায়, রাগ আমাদের একটি আবেগের বিষয়, যেটা সবার ক্ষেত্রে একই ধরনের হয় না, কেউ অল্পতেই অনেক বেশি রেগে যায় আবার কেউ অনেক বেশি কিছু ঘটলেও রাগ করেনা বা সামান্য রাগ দেখায়।
যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে চান বা রাগ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চান, তারা এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়তে থাকুন।
রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন রাগ আসলে প্রথমেই আউযুবিল্লাহিমিনাশ শাইতানিররাজিম পড়তে থাকবেন। প্রিয় পাঠক বেশি রাগ চলে আসলে আপনি তখন চুপ থাকার চেষ্টা করবেন। অনেকেই রেগে গেলে গড়গড় করে বিভিন্ন ধরনের বাজে কথা বলে, গালিগালাজ করে, যা মোটেও ঠিক নয়।
আবার কেউ কেউ চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়ে, এই মুহূর্তেই আপনি একটু চুপ থাকবেন। বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন, কেউ যদি রেগে যায় সে যেন চুপ থাকে। আপনি যদি আপনার রাগ থামাতে চান তাহলে আপনাকে দ্বিতীয় যে কাজটা করতে হবে সেটা হলো চুপ থাকা অর্থাৎ আপনাকে চুপ থাকতে হবে।
আপনি রেগে গেলে আপনার কার্যক্রম কমিয়ে দিন। আপনি যদি দাঁড়িয়ে থেকে রেগে যান তাহলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও বসে থাকবেন। বসে যাওয়ার পরেও যদি রাগ কমে না যায়, আপনি শুয়ে যাবেন। তারপরেও যদি আপনার রাগ না কমে তাহলে ঠান্ডা পানি দিয়ে অজু করে নিবেন।
মনে রাখতে হবে রাগ আসে শয়তান থেকে। রাগ এনে দেয় শয়তান। শয়তান তৈরি আগুন দিয়ে, আর আগুন নিভায় পানি দিয়ে। এজন্য তোমাদের মধ্যে যদি কেউ রেগে যায় সে যেন ঠান্ডা পানি দিয়ে ওযু করে নেয়। তার রাগ ঠান্ডা করে দেবে আল্লাহ। সুবহানাল্লাহ
স্বামী যদি ছোটখাটো ব্যাপারে বা সামান্য ব্যাপারে রেগে যায় আর সেই রাগের পেছনে যদি স্ত্রীর কোনরকম হাত না থাকে তাহলে স্ত্রীদের চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই। কারণ এটার দায়ভার আপনার উপরে আসবে না। যদি আপনি কোন ভুল ত্রুটি না করে থাকেন।
তারপরেও একজন স্ত্রী হিসেবে স্বামীর রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করতে হবে। এখন কিছু রোমান্টিক উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব, যা মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন। স্ত্রীকে মনে করতে হবে যে, সে তার স্বামীর অধীনে, এই অধীনে থাকা মনে করার মধ্য দিয়েই সংসারে বা পরিবারে শৃঙ্খলা বজায় থাকবে।
অপরদিকে স্ত্রী যদি তার স্বামী কে অভিভাবক হিসেবে মনে করে বা মেনে নেয় তাহলে পরিবারে বা সংসারের সুখ শান্তি বজায় থাকবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বামীর রাগ সহ্য করার মত ক্ষমতা থাকতে হবে অনেক ক্ষেত্রে একজন স্ত্রীকে ধৈর্যশীল হতে হবে। স্ত্রী ধৈর্যশীল হলে পরিবারের বন্ধন আরো মজবুত হয়।
তাই স্বামী রেগে গেলে, স্ত্রীর রাগ না করে ধৈর্য ধরে তার রাগ কমিয়ে আনার চেষ্টা করা উচিত। যদি হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই রেগে যায় আপনার স্বামী তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য ধরে চুপ থাকতে হবে, কিন্তু আপনি যদি চুপ না থেকে তর্ক করেন তাহলে পরিস্থিতি আর স্বাভাবিক থাকবে না।
তখন আপনি যদি চুপ থাকেন তাহলে দেখবেন কিছুক্ষণ পরে তার রাগ অভিমান কমে যাবে। আপনি যদি এই মুহূর্তে তর্ক করেন তাহলে সে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে অঘটনা ঘটাতে পারে সে নিজের ক্ষতি করতে পারে বা আপনার গায়ে হাত তুলতে পারে।
দাম্পত্য জীবনে যখন প্রচন্ড রাগারাগি ঝগড়াঝাটি তৈরি হবে তখন উচিত হবে পরিস্থিতিকে শান্ত করার জন্য যেকোনো একজনকে ছাড় দেওয়া কারণ দুজনার একজনও যদি ছাড় না দেয় তাহলে পরিস্থিত ভয়ংকর ভাবে খারাপ দিকে চলে যাবে।
তাই যে কোন একজনকে ধৈর্যশীল হতে হবে এবং ছাড় দিতে হবে সে মানসিকতা তৈরি করতে হবে। স্বামীর রাগ যখন কমে যাবে তখন দেখবেন যে, সে অনুতপ্ত হবে এবং স্বামী রেগে যাওয়ার সময় স্ত্রী যে চুপ ছিলেন বা তর্ক করেন নাই তার জন্য পারিবারিক ও বৈবাহিক জীবনে স্ত্রীর প্রতি আরো ভালোবাসা স্বামীর বেড়ে যাবে।
স্ত্রী যখন রেগে যাবে প্রিয় ভাইয়েরা আমার আপনারা উত্তেজিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রাখুন নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন কারণ স্ত্রী যখন রেখে যায় তার সাথে সাথে আপনিও যদি রেগে যান তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে যার ফলস্বরূপ ঘটতে পারে অনেক খারাপ কিছু।
আপনাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে কেন আপনার স্ত্রী আপনার উপরে রেগে যাচ্ছে আপনি যদি কারণগুলো আইডেন্টিফাই করতে পারেন, এবং তার পছন্দমত চলার চেষ্টা করতে পারেন তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে সে শান্ত হয়ে যাবে, ইনশাল্লাহ।
আপনার স্ত্রী যখন রেগে যাবে তখন তার কথা ধৈর্য ধরে শুনতে থাকুন যদিও তার কথা শুনে অনেক রাগ হতে পারে তারপরও চুপ করে শুনতে থাকুন, একপর্যায়ে সে নিজেই রাগ করে কথা বলতে বলতে থেমে যাবে, যদি আপনার দোষ না থাকে রাগ কমে গেলে সে অনুতপ্ত হবে এবং স্বাভাবিকভাবে আপনার সাথে কিছু সময় পর কথা বলতে শুরু করবে।
এর ফলে আপনার প্রতি অতি বিশ্বাস এবং গভীর ভালোবাসা তৈরি হবে ইনশাল্লাহ। স্ত্রী রেগে যাওয়ার সময় তার প্রশংসা করতে পারেন যেমন বলতে পারেন তুমি রেগে গেলে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগে দেখবেন নিমিষেই তার রাগ কমে গেছে।
আরো পড়ুনঃ টেনশন দূর করার উপায় জেনে নিন
স্ত্রীর রাগ হলে নিজে রাগ না করে, একটু ভালোবাসা দেখান দেখবেন যে মন নরম হয়ে গেছে এবং আপনাকে ভালবাসতে বাধ্য। সাধারণত প্রচন্ড মানসিক চাপ থেকে রাগের সৃষ্টি হয়। তাই স্ত্রীকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করুন বিশেষ করে যখন রেগে যাবে তখন তাকে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করুন।
এমন কিছু করুন যাতে সে রাগের পরিবর্তে হেসে ওঠে। তাকে বিশেষ কোনো মুহূর্তে বিশেষ কোন দিনে গিফট করতে পারেন, তাকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন এ ছোট ছোট আনন্দ গুলো আপনাদের ভালোবাসাকে গভীর করবে।
যদি আপনার কোন ভুলের কারণে স্ত্রী রেগে যায় তবে নিজের ভুল স্বীকার করে স্ত্রীর কাছে ভুল স্বীকার করলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন মনটা ভালো হয়ে যাবে, রাগও কমে যাবে।
পরিশেষে
প্রিয় বন্ধুগণ আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আমি আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্যতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url